জয়পুরহাটের একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মারধরের অভিযোগ উঠেছে।
সর্বশেষ গত শুক্রবার রাতে প্রতিষ্ঠানটির আবাসিক শিক্ষার্থীদের ২২ জনকে বেত্রাঘাত করার পর সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হয় বলে জানিয়েছেন জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাশেদুল ইসলাম।
জয়পুরহাট জেলা শহরের প্রফেসরপাড়া এলাকায় নর্থ বেঙ্গল মডেল স্কুল অ্যান্ড ক্যাডেট একাডেমি নামের ওই প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ দিন ধরে আবাসিক ও অনাবাসিক ব্যাচে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হচ্ছে। পাশ্ববর্তী কয়েকটি জেলার অনেক শিক্ষার্থীও প্রতিষ্ঠানটিতে লেখাপড়া করতে আসে।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক আশিকুর রহমান, এমদাদ হোসেন, আবুল বাশার ও ওমর ফারুক শিক্ষার্থীদের অমানবিক মারধর করে আসছিলেন।
এর মধ্যে গত শুক্রবার রাতে গান গাওয়া ও টেলিভিশন দেখার সময় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র আবাসিক শিক্ষার্থীদের ২২ জনকে বেত্রাঘাত করেন তারা। পরে রাতেই এক শিক্ষার্থী পালিয়ে বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের বিষয়টি জানায়।
ওই অভিভাবক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসে পরিচালক ও প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামকে অভিযোগ জানান । তখন অন্য শিক্ষার্থীরাও তাদের উপর দীর্ঘদিন ধরে চলা অমানবিক ও ধারাবাহিক নির্যাতনের বিষয়টি তাদের পরিবারকে জানায়।
দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রেজাউন জান্নাত বলেন, সকালে শিক্ষক আসতে দেরি করায় আমি গান গাইছিলাম। হঠাৎ এমদাদ স্যার এসে আমাকে বেদম মারধর করেন।
একই শ্রেণির শিক্ষার্থী আনাম হাসান বলেন, একবার স্যার ক্লাসে ঢুকে ‘হু আর ইউ’ বলেই তাদের মারতে শুরু করেন। কেন মারা হলো তাও তারা জানেন না।
শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, এক বন্ধুর সঙ্গে কথাকাটাকাটির ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদেরকেও পেটানো হয়েছে।
শিক্ষার্থী সোহান ফারদিন অভিযোগ করে বলেন, আমি বেতন কিছুটা কম দেই। এজন্য স্যার আমাকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে মারধর করেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এসব ব্যাপারে পরিচালক ও প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামের কাছে অভিযোগ দিলেও তিনি শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি প্রধান শিক্ষক।
অভিভাবকরা বলেন, তাদের বাচ্চাদের শিক্ষকরা শাসন করতেই পারেন কিন্তু ধারাবাহিক নির্যাতন মেনে নেওয়ার মত না। তারা খবর পেয়ে দ্রুত এসে দেখেন তাদের বাচ্চাদের শাসন নয়, হিংস্রতার সঙ্গে মারধর করা হয়েছে। প্রায়ই এভাবে নির্যাতন চলে। আমরা শিক্ষার্থী নির্যাতনের সঠিক তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।
এদিকে অভিযোগ ওঠা শিক্ষকরা পালিয়ে গেলেও অভিভাবকদের বিক্ষোভের মুখে পুলিশ গিয়ে পরিচালক ও প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামকে থানায় নিয়ে যায়। পরে মুচলেকা দিয়ে তিনি বাসায় ফিরে যান বলে জানান জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তামবিরুল ইসলাম।
নর্থ বেঙ্গল মডেল স্কুল অ্যান্ড ক্যাডেট একাডেমির পরিচালক ও প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাশেদুল ইসলাম বলেন, আঘাতকারীদের ঘটনাস্থলে গিয়ে না পাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা যায়নি। তবে প্রতিষ্ঠান প্রধান জড়িত শিক্ষকদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দিবেন মর্মে লিখিত অঙ্গীকার করেছেন। এছাড়া একটা তদন্ত কমিটিও গঠন করে দেওয়া হয়েছে, প্রয়োজনে কমিটির সুপারিশে নিয়মিত মামলা করা যাবে।
বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার পর্যটন কেন্দ্র কেওক্রাডং পর্বত আগামী ১ অক্টোবর ২০২৫ থেকে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হচ্ছে। গতকাল বান্দরবান জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, জেলা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও সমন্বয় সংক্রান্ত কোর কমিটির ২১ সেপ্টেম্বরের সভার সিদ্ধান্ত, রুমা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের চিঠি এবং বান্দরবান রিজিয়নের সেনানিবাস থেকে প্রেরিত চিঠির আলোকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় রুমা উপজেলার কেওক্রাডংসহ যেসব পর্যটন কেন্দ্র উন্মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে, শুধুমাত্র সেসব জায়গায় পর্যটকদের ভ্রমণের অনুমতি থাকবে। এর বাইরে অন্যান্য স্থানে পর্যটকদের যাতায়াত নিষিদ্ধ।
গণবিজ্ঞপ্তিতে পর্যটকদের জন্য নিম্নলিখিত শর্তসমূহ আরোপ করা হয়, ক. সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় রুমা উপজেলার যে সকল পর্যটন কেন্দ্র উন্মুক্ত করা হয়েছে সেসব পর্যটন কেন্দ্র ব্যতীত উপজেলার অন্য জায়গায় পর্যটকদের গমনাগমন নিষিদ্ধ থাকবে। খ. জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নিবন্ধিত ট্যুর গাইড ব্যতীত ভ্রমণ করা যাবে না। গ. পর্যটন কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট চেকপোস্ট ও পর্যটন তথ্য সেবা কেন্দ্রে চাহিত তথ্য অবশ্যই সরবরাহ করতে হবে। ঘ. পর্যটক কর্তৃক উপর্যুক্ত নির্দেশনাসমূহ অমান্য করা হলে তৎক্ষণাৎ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অথবা নিকটবর্তী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবগত করতে হবে। ঙ. পাহাড়ি রাস্তায় চলাচলের অনুপযোগী ও ফিটনেসবিহীন সকল যানবাহন উল্লিখিত পর্যটন কেন্দ্রসমূহে চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। পর্যটকবাহী সকল যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে উপজেলা প্রশাসন বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। চ. অযাচিত যেকোনো ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট পর্যটন সংস্থার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং পর্যটন শিল্পের উপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের সিকদার হাট গ্রামে ঘর থেকে মা ও মেয়ের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে বারোটার দিকে এ ঘটনা জানা যায়। নিহতরা হলেন ওই গ্রামের জগদীশ রায়ের স্ত্রী সুমনা রানী (৪২) ও তাঁর বাক্প্রতিবন্ধী ও মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়ে শাপলা রানী (১৮)।
স্থানীয়রা জানান, সুমনা রানী ঝাড়ফুঁক ও কবিরাজি চিকিৎসা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তাঁর স্বামী কয়েক বছর আগে দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র বসবাস শুরু করেন। সোমবার সকালে একটি এনজিওর কর্মী ঋণের টাকা নিতে তাঁর বাড়ি যান। তখন তাঁকে না পেয়ে ফিরে আসেন। সন্ধ্যায় আবার গেলে ঘরের ভেতর থেকে কোনো শব্দ না পেয়ে উঁকি দেন। তখনই তীব্র দুর্গন্ধ পেয়ে এলাকাবাসীকে খবর দেন তিনি। পরে ইউপি সদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
ইউপি সদস্য হোসেন আলী বলেন, ‘ঘরে ঢুকতে পারছিলাম না। দরজা বন্ধ ছিল। পুলিশ এসে পেছনের টিন কেটে ভেতরে উঁকি দিলে মা-মেয়ের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখি। চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল।’
পুলিশ ও এলাকাবাসীর ধারণা, সুমনা রানী বাড়ি রক্ষার জন্য দরজায় বিদ্যুতের তার জড়িয়ে রাখতেন। এতে চুরি ঠেকানো ও মেয়েকে নিরাপদে রাখাই ছিল উদ্দেশ্য। তবে রাতে ঘুমানোর আগে সুইচ বন্ধ করতে ভুলে যাওয়ায় মা-মেয়ের মৃত্যু ঘটে। পরে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হন, দরজার লোহার নেটে তখনো বিদ্যুৎ প্রবাহিত হচ্ছিল।
এ বিষয়ে ভূল্লী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, ‘ঘরের দরজার নেটে বিদ্যুতের সংযোগ ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, বিদ্যুতায়িত হয়ে দুই-তিন দিন আগে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে।’ বাড়িটা অনেকটাই ভুতুড়ে বাড়ির মত পরিত্যক্ত দেখা যায়।
এদিকে নিহতের ঘরে থাকা তিনটি ছাগলও অনাহারে দুর্বল হয়ে পড়েছিল। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
পাহাড় ধসের মাটির প্রতিবন্ধকতায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ফটিকছড়ির নারায়ণহাট - মীরসরাই সড়ক।
প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে শতশত যানবাহন যাতায়াত করে । বিশেষ করে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সবজি ও মৎস্য পরিবহণে ব্যাপক অবদান রেখে থাকে সড়কটি।
বর্তমানে সড়কের এমন বেহাল দশার কারনে যাত্রী সাধারণের ভোগান্তি যেমন বেড়েছে তেমনিভাবে পণ্য পরিবহনেও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যানবাহন চালকদের।
২৯ সেপ্টেম্বর সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘের সড়কটি ফটিকছড়ি উপজেলার নারায়নহাট বাজার থেকে পশ্চিম দিকে পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথ বেয়ে মীরসরাই সদরে গিয়ে যুক্ত হয়েছে।
এর মধ্যে সড়কটির একাধিক স্থানে রয়েছে গভীর খাদ। খাদগুলোর প্রায় প্রতিটি স্থানে রাস্তা ধসে গিয়ে চলাচলের পথ সংকোচিত হয়ে পড়েছে।
এদিকে,সড়কটির সবকটি বিপদজনক স্থানে সাবধানতা অবলম্বনে ব্যক্তি উদ্যোগে লাল কাপড় টানিয়ে দিতে দেখা গেলেও সড়ক বিভাগের কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনি।
তবে ধসে পড়া স্থানগুলোতে গাড়ি থেকে নেমে যাত্রী সাধারণ পারাপার হলেও পন্য বোঝাই গাড়ি নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে চালকদের।
এ সময় নারায়নহাট থেকে মীরসরাইগামী পিকআপ চালক জয়নাল আবেদীন বলেন, সড়কটি এমনিতেই সরু। এর মধ্যে সড়কের উপর পাহাড় ভেঙ্গে পড়েছে। কয়েকটি স্থানে রাস্তা ধসে যাওয়ায় ছোট হয়ে গেছে চলাচলের পথ।তারপরেও দূরত্ব কম হওয়ায় ভয় নিয়ে গাড়ি চালাতে বাধ্য হচ্ছি।
একই রকম অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে স্থানীয় লেবু ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দিন বলেন, দুই দিন আগে এ সড়কে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছি।
এনজিও কর্মকর্তা ইকবাল কবির বলেন বিকল্প রাস্তা না থাকায় প্রতিদিন এ সড়ক ব্যবহার করে অফিসে যেতে হয়। ওই সময়টা বেশ ঝুঁকির মধ্যে থাকি।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগ চট্টগ্রাম অফিসের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফারহান জানান, অতি বৃষ্টির কারণে এ সড়কের কয়েকটি অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বিষয়টি বিবেচনায় এনে ১০ কিলোমিটার অংশ সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
বায়ুদূষণের সূচকে অবনতি হয়েছে ঢাকার। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বায়ুদূষণে বিশ্বের শহরগুলোর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে ঢাকা। এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে ১৬০ স্কোর নিয়ে ঢাকার বাতাসের মান অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে রয়েছে। বাতাসের মান পর্যবেক্ষণকারী সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের সূচক থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আজ সকালে ঢাকার সবচেয়ে দূষিত বাতাস বিরাজ করছে মিরপুরের ইস্টার্ন হাউজিং এলাকায়। তালিকায় এর পরেই রয়েছে যথাক্রমে গোড়ান, পুরান ঢাকার বেচারাম দেউড়ি, কল্যাণপুর, পীরেরবাগ রেল লাইন, মিরপুর ৬ এর সরকারি অফিসার্স কোয়ার্টার, মাদানি সরণির বেজ এজওয়াটার, তেজগাঁওয়ের শান্তা ফোরাম ও গুলশানের গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল। সবগুলো এলাকার বাতাসের মান অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে রয়েছে।
ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উপাদান হলো বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫-এর উপস্থিতি।
আজ ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার পরিমাণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ডের চেয়ে প্রায় ১৪ গুণ বেশি রয়েছে।
এদিন বিশ্বের শহরগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর। ২১৪ একিউআই স্কোর নিয়ে শহরটির বাতাসের মান খুবই অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে রয়েছে। তালিকায় তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে থাকা পাকিস্তানের করাচী, সেনেগালের ডাকার ও ভারতের দিল্লির বাতাসের মান অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে রয়েছে।
আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, স্কোর শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকলে বায়ুর মান ভালো বলে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে মাঝারি বা সহনীয় ধরা হয় বায়ুর মান। সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে খুবই অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচনা করা হয়।
এ ছাড়া ৩০১-এর বেশি হলে তা দুর্যোগপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।
গত এক দিনে ৭৩৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময়ে রোগটিতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতির এ তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৬ হাজার ৭৮৬ জন এবং মৃত্যু হয়ে ১৯৫ জনের।
গতকাল সোমবার মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনই পুরুষ। তাদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বগুড়ার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে একজন করে মারা গেছেন।
এদিকে, গত এক দিনে হাসপাতালে ভর্তি নতুন রোগীদের মধ্যে ঢাকা মহানগরে ২১৬ জন, ঢাকা বিভাগে (মহানগরের বাইরে) ১৫৬, বরিশাল বিভাগে সর্বোচ্চ ১১৬, চট্টগ্রাম বিভাগে ৯৮, রাজশাহী বিভাগে ৫৭, খুলনা বিভাগে ৩৯, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৫, রংপুর বিভাগে ১৭ ও সিলেট বিভাগে চারজন ভর্তি রোগীর তথ্য পাওয়া গেছে। অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত বরিশাল বিভাগে। বেশি মৃত্যু ঢাকা মহানগরে। গতকাল সোমবার পর্যন্ত বরিশাল বিভাগে আক্রান্ত হয়েছে ১৩ হাজার ২১০ জন এবং মৃত্যু ২৯ জনের।
বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার তৃতীয় দিন মহাষ্টমী আজ মঙ্গলবার। প্রতিবছরের মতো এবারও মহাষ্টমীতে সকালে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে কুমারীপূজা অনুষ্ঠিত হবে। মাতৃভাবে কুমারী কন্যাকে জীবন্ত প্রতিমা করে তাতে জগজ্জননীর উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করাই কুমারীপূজা।
রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামী মহারাজ একনাথনন্দ কুমারীপূজার গভীর আধ্যাত্মিক তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে বলেন, নারী মানে মায়ের প্রতীক।
কুমারীপূজা মানে স্বয়ং মাকে পূজা করা। তিনি জানান, কোনো ছোট্ট শিশুকন্যাকে ‘কুমারী মা’-এর আসনে বসানোর পরপরই সকাল ৬টা ৩৩ মিনিটে রামকৃষ্ণ মিশনে শুরু হবে কুমারীপূজার আনুষ্ঠানিকতা। সকাল ৯টা ২৮ মিনিটের মধ্যে কুমারীপূজা শেষ হবে। বিকেল ৫টা ৩৭টা সন্ধিপূজা শেষ হবে।
মধ্যাহ্নে মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমে দেবী দুর্গা স্বয়ং স্বর্গীয় আবির্ভাব ঘটাবেন এক কিশোরীর মাঝে। দেবীরূপে মানবীর মঞ্চে অধিষ্ঠিত হবেন মাত্র সাত বছর বয়সী রাজশ্রী ভট্টাচার্য্য। রাজশ্রী ভট্টাচার্য্য নারায়ণগঞ্জের দেওভোগ আখড়া এলাকার পাপ্পু ভট্টাচার্য্য ও স্বর্ণা ভট্টাচার্য্যের মেয়ে।
সে নারায়ণগঞ্জ আইডিয়াল স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী।
এদিকে দুর্গোৎসবের দ্বিতীয় দিন গতকাল সোমবার সারা দেশে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ধর্মীয় মর্যাদায় উদযাপিত হয়েছে মহাসপ্তমী। নবপত্রিকা স্থাপনের মধ্য দিয়ে মহাশক্তি আনন্দময়ীর পূজা শুরু হয়। মহাসপ্তমীতে ষোড়শ উপাচারে অর্থাৎ ষোলটি উপাদানে দেবীর পূজা হয়। সকালে ত্রিনয়নী দেবী দুর্গার চক্ষুদান করা হয়।
সপ্তমীতে সকালে মণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, ভক্তরা প্রার্থনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। পুরহিতের সঙ্গে মন্ত্রে সুর মিলিয়ে করছেন দুর্গা মায়ের বন্দনা। কেউ কেউ এসেছেন শুধু দেবী দর্শনে। পূজা শেষে বিতরণ করা হয়েছে মহাপ্রসাদ।
পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্বেগ : দেশের বিভিন্ন স্থানে কিছু প্রতিমায় অসুরকে বিকৃতভাবে উপস্থাপনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর ও সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা এবং মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব ও সাধারণ সম্পাদক ড. তাপস চন্দ্র পাল গতকাল এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, এ ঘটনা নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ও সেনাবাহিনীর যৌথ উদ্যোগে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এ নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির কোনো অবকাশ নেই।
মন্তব্য